পুরুলিয়া জেলার বুকে কংসাবতী নদীতীরে প্রাচীন সংস্কৃতির চিহ্ন নিয়ে ঐতিহ্যে মহিমান্বিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সিদ্ধ স্থান দেউলঘাটা। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় তিন হাজার বছর আগেকার পাথরের দুর্গামূর্তি পূজিত হয় এখানে। অষ্টসিদ্ধি প্রদায়িনী সিদ্ধেশ্বরী শ্রীশ্রী চণ্ডীর সিংহবাহিনী মহিষমর্দিনী মূর্তি এখানে অষ্টমাতৃকাবিশিষ্ট। অনুমান করা হয়, এই মূর্তিটি সম্ভবত বর্তমানে প্রচলিত দেবীমূর্তির থেকে একটু আলাদা। পুরোহিত দর্পণ শাস্ত্রে দেবীর ধ্যানমন্ত্রের সঙ্গে এই মূর্তিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধ্যানমন্ত্র অনুযায়ী দেবী দুর্গার বাম পা মহিষের উপর থাকার কথা, কিন্তু দেউলঘাটার দেবীমূর্তির ডান পা মহিষের উপর বিরাজমান। অনেকের অনুমান, এই মূর্তিটি পাল যুগের। আবার মূর্তির মাথার উপরে অষ্টদল পদ্ম থাকায় মনে করা হয় এটি গৌতম বুদ্ধের আমলের। মহালয়ার দিনে চণ্ডীপাঠ দিয়ে শুরু হয় পুজো। পুজোর চারটি দিন মহাধুমধামে শাস্ত্রমতে পালিত হয়। এখানে বলিপ্রথার চল আছে। দেউলঘাটা আশ্রমের পক্ষ থেকে অন্নভোগের আয়োজন করা হয়। জেলা তথা রাজ্য, এমনকী ভিনরাজ্য থেকেও প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়ে থাকে। দেউলঘাটার আশ্রমকন্যা তনুশ্রী মুখার্জির কথায়— দুর্গাপূজা ছাড়াও সারাবছর আশ্রমের উদ্যোগে নিত্যপূজা হয়ে থাকে।