Digital Durga
Digital Durga

সংরক্ষণ

সিকদারবাগান সাধারণ দুর্গোৎসব কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ (১৯১৩)

পুজোর ইতিহাস

১৯১৩ সালে জনৈক রাজেন দত্তের দৃঢ় আগ্রহে এবং কেষ্ট ব্যানার্জি, বিভূতিভূষণ দাস, খোকা মণ্ডল প্রমুখের প্রচেষ্টায় স্থানীয় বাসিন্দা শ্রী লালমোহন দত্তের বাড়িতে শুরু হয় এই পুজো। পরবর্তীকালে সেখানে ফাঁকা জায়গার সমস্যা হওয়ায়, ১৯৩৩ সাল থেকে স্থানীয় সান্যাল বাড়ির সামনে আয়োজিত হতো পুজো। পঞ্চাশের দশকে এই পুজো সরে আসে ‘৫৫ সিকদারবাগান স্ট্রীট’— এই ঠিকানায়। ১৯৯৬ সালে আবারও সরে এসে ‘৭৮ সিকদারবাগান স্ট্রীট’ ঠিকানায় শুরু হয় পুজো। শাস্ত্ররীতি মেনে, ঐতিহ্যকে বজায় রেখে, ঘরোয়া পরিবেশে আয়োজিত হয় এই পুজো। কিছুদিন আগে পর্যন্ত বিসর্জনের পর প্রতিমার কাঠামো ফের তুলে আনার রেওয়াজ ছিল এখানে। সেই কাঠামোতেই গড়া হতো পরের বছরের নতুন প্রতিমা। সরকারি নিয়ম-নিষেধের কারণে সেই চল আজ আর নেই বটে, তবে অন্যান্য রীতি-রেওয়াজ মেনেই পুজো হয় আজও। বিগত ৩৩ বছর ধরে কৃষ্ণনগরের কারিগরই প্রতিমা গড়েন। ৩০ বছর ধরে মিহিরবর্মণ ভট্টাচার্যের পৌরোহিত্যে এই পুজো সম্পন্ন হয়। সপ্তমীতে নবপত্রিকা ও ঘট স্থাপন, অষ্টমীতে কুমারীপূজা ও স্থানীয় মহিলা বাসিন্দাদের তত্ত্বাবধানে সন্ধিপূজা, নবমীতে প্রসাদ বিতরণ এবং দশমীর সন্ধ্যায় সিঁদুরখেলার মাধ্যমে মা দুর্গাকে বিদায় জানিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। একসময়ে এই পুজোর অনুষ্ঠানে ‘সিকদারবাগান বান্ধবসমাজ’ গোষ্ঠীর আয়োজনে ‘নদীয়া বিনোদ’ নাটক খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। ১৯৩২ থেকে ’৩৬ সাল অবধি এই নাটকে নিমাইয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন প্রখ্যাত ছবি বিশ্বাস। শুরুর দিন থেকে বহু মানুষের মূল্যবান অবদান এই দুর্গোৎসবের পাথেয় হয়ে রয়েছে। তাঁদের মধ্যে হীরালাল সেন (বাংলা চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ), ডা: ডি. বসু (প্রাক্তন অধিকর্তা, ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স), বিনোদবিহারী বসু (নিয়ামক, হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ডস্‌ পত্রিকা), বি. কে. ভড় (পরিব্যায় হিসেব সংক্রান্ত গ্রন্থের প্রথম প্রণেতা), ভোলানাথ বাগচী (প্রখ্যাত তবলাবাদক) প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। ১০০ বছর পেরিয়ে আজও অব্যাহত এই পুজোর যাত্রা। এবার ১০৮তম বর্ষের দিকে পা বাড়িয়েছে উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যমণ্ডিত এই পুজো।

ম্যাপ