রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের বেয়াইবাড়ি হিসেবেই পরিচিত রায়বাড়ির এই পুজো আজও রাজবাড়ির নিয়মেই হয়। কৃষ্ণনগর শহরেই অবস্থিত এই রায়বাড়ি, যার নামেই এই এলাকার নাম রায়পাড়া। রায়পাড়াতেই রায়বাড়ির এই পুজোর সূচনার ইতিহাস রয়েছে। ১৭৫০ সালে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল রাজবাড়ির হাত ধরেই। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের দ্বিতীয় পুত্র ভৈরবচন্দ্রের তিন কন্যার বিয়ে একইদিনে হয়েছিল রায়বাড়িতে। তিন মেয়ের বিয়ের পর ভৈরবচন্দ্রের স্ত্রী রাণী ভবানী রায় তিন মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে রাজবাড়ির রীতি মেনে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন মেয়েদের মঙ্গলকামনায়। সেই পুজো আজও হয়ে আসছে রায়বাড়ির বিরাট নাটমন্দিরে। প্রতিমা তৈরি হয় জোরকদমে। রায়বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম বলেন, যে রাজবাড়ির নিয়মেই রায়বাড়িতে পুজো হয়। দুই বাড়ির প্রতিমাও দেখতে একইরকম। রাজবাড়ির তিন কন্যার বংশধরদের পুজোর আনন্দ আজও একইরকম। সময়ের নিয়মে অনেকেই বাইরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছেন, তবে পুজোর সময়ে সবাই একসঙ্গে মেতে ওঠেন। রাণী ভবানী রায় তার তিন মেয়ের নামে সংকল্প করে পুজো শুরু করেছিলেন। আজও সেই রীতি মেনে পুজোর সংকল্প পরিবারের মহিলাদের নামেই হয়। পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত পুজো সামলান মহিলারাই। উল্টোরথের দিনে পাঠপুজো হয়। ষষ্ঠীতে বাড়ির পুরুষরা নিজেদের হাতে প্রতিমা বেদিতে তোলেন। এবাড়ির পুজোয় রোজ আমিষ ভোগ দেওয়া হয়। দশমীতে বাড়ির বয়স্ক সধবা মহিলারা তাদের বিয়ের বেনারসী পরে মুখে পান দিয়ে প্রতিমা বরণ করতেন, পরে বরণ করতেন ছোটরা। সেই রীতিও বজায় আছে এখনও।