বর্তমানে কাঁকুড়গাছি যুবক বৃন্দ কলকাতার বুকে অন্যতম পরিচিত নাম হলেও এই পুজোর শুরু হয়েছিল এক ভয়াবহ অত্যাচারকালে, আমাদের এই ভালোবাসার পুজোর শুরু হয়েছিল ১৯৩০ সালের ইংরেজ শাসিত বাংলার ছোট্ট এক শহরতলী অঞ্চল যাকে আসে পাশের লোকেরা গোয়ালাপাড়া বলে চিনতো, শুরুতে এই পুজোর নাম ছিল কাঁকুড়গাছি সার্বজনীন দুর্গোৎসব, এই পুজো শুরু তৎকালীন গোয়ালা সম্প্রদায়ের হাত ধরে হলেও তাদের সাথে একজোট হয়েছিল পাড়ার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের এবং সম্ভ্রান্ত পরিবারের মানুষজন যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, স্বর্গীয় পঞ্চানন ঘোষ, স্বর্গীয় সুবল কোলে,স্বর্গীয় সুধীর ঘোষ, স্বর্গীয় লক্ষী নারায়ন সাউ, এবং পরিতোষ ঘোষ উল্লেখ্য এই সকলের মধ্যে একমাত্র পরিতোষ বাবু জীবিত, এবং সেই সময় স্বর্গীয় দুলাল চক্রবর্তী এবং স্বর্গীয় অতুল চক্রবর্তীর হাতে আমাদের মায়ের আরাধনার সকল দায়িত্বভার থাকতো, সেই সময় পুজো হতো অঞ্চলের একটি মাঠে, যেখানে একচালার প্রতিমার পুজোর সাথে সাথে সবাই সমান ভাবে মেতে উঠতো পুজোর মেলাতেও, বড়দের মুখে শোনা স্বাধীনতাকালে দেশ ভাগের সময় হিন্দু মুসলিম এর দ্বন্দ্বের কারনে পুজো হয়েছিল সেনাদের তত্বাবধানে, সময় এগিয়েছে দিন বদলেছে, একচালার প্রতিমা থেকে ভিন্ন চালার সাবেক প্রতিমা, কাপড় সেলাই প্যান্ডেল থেকে বিভিন্ন মন্দিরের আদলের প্যান্ডেল এবং পরবর্তী সময়ে বেতের প্যান্ডেল, ঝুড়ির প্যান্ডেল । পটুয়া পাড়ার প্রতিমা থেকে রুদ্রপালের প্রতিমা গত ৯১বছরে অনেক কিছুই দেখেছে এই এলাকার বয়স্ক থেকে ছোট সকলে, পার্শবর্তী এলাকায় সাবেক পুজো বলে পরিচিত হলেও এই পুজোর সম্পুর্ন রূপে থিমে হাতেখড়ি হয় ২০১৩সালে শিল্পী অনির্বান দাস এবং প্রতিমা শিল্পী নব কুমার পালের হাত ধরে ২০১৪ সালে এই দুজনের হাত ধরেই আমাদের পুজোর প্রাপ্তি ঘটে সেই বহু প্রতীক্ষিত পুজোর অস্কার "এশিয়ান পেন্টস" শারদ সম্মানের, তার পরবর্তী সময়ে কৃশানু পাল, রূপক বসু, প্রতিমা শিল্পী পরিমল পাল, শিল্পী জুটি মলয় শুভময়'এর মত গুণী শিল্পীদের সান্নিধ্যে আমাদের পুরস্কারের ঝুলি যেমন ভরেছে তেমনই কলকাতার মানুষও দেখার সুযোগ পেয়েছে নতুন নতুন ভাবনার কাজ, উল্লেখ্য বিগত বছর গুলি পেরিয়ে এসে গত ২০২১'এর পুজোর দায়িত্বে ছিল বর্তমানে প্রতিভাবান শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম শিল্পী প্রদীপ দাস এবং প্রতিমা শিল্পী পিন্টু দাস যাদের হাত ধরে দ্বিতীয়বারের জন্য আমরা পুজোর অস্কারের ছোঁয়া পাই, যার ফলে কলকাতার মানুষের কাছে আগামী দিনে ভালো মানের পুজো তুলে ধরার দায়িত্ব অনেকাংশেই বেড়ে গেছে যে তা বলাই বাহুল্য তবে আমরাও আশা রাখি আগামীতে এভাবেই মানুষকে আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ করে দিতো পারবো এবং এভাবেই পুজো পাগলামি নিয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে থাকবো....