আজ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচশো বছর আগের শর্তানুসারে আজও ছত্রিনা রাজ্যে অর্থাৎ অধুনা ছাতনা রাজবাড়িতে ঐতিহ্য মেনে দুর্গাপুজোর অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। প্রতিবেশি রাজ্য মল্লভূমের সঙ্গে মতবিরোধের ফলে একসময় যুদ্ধ শুরু হয়। কুলদেবী মা বাসুলীর ছত্র-ছায়া তথা আশীর্বাদধন্য ছত্রিনা রাজ্য যেভাবে দৈবশক্তির কৃপাধন্য ছিল; তেমনি মল্লভূমও কুলদেবী মৃন্ময়ীর কৃপায় শক্তিশালী ছিল। তাই এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই যুদ্ধের প্রারম্ভেই দেবাধিদেব মহাদেব আবির্ভূত হন এবং দুই দৈবশক্তির সন্ধি ঘটান। সন্ধির শর্তানুসারে সামন্তভূমে দেবী মৃন্ময়ীর পূজা এবং মল্লভূমে দেবী বাসুলীর পূজার প্রচলন হয়। সেই সময় সামন্তভূমে দেবী বাসুলী ছাড়া অন্য পূজা হত না। এই শর্তের কারনেই দেবাধিদেব মহাদেব ‘এক্তেশ্বর শিব’ নামে আজও দুই রাজ্যের সীমারেখায় পূজিত হয়ে আসছেন। 'এক্তেশ্বর', অর্থাৎ একতার ঈশ্বর। দুই রাজশক্তিকে একতার মেলবন্ধনে বাঁধার কারনেই তিনি আজও দুই রাজ্যের জনসাধারনের কাছে পূজিত। দুর্গাপুজোর বোধন শুরু হয় জীতাষষ্ঠীর দিন থেকে। অর্থাৎ , সপ্তমী পূজার পনেরোদিন আগে থেকে। ঐ দিন থেকেই রাত্রে ভোগ নিবেদন করা হয়। ষষ্ঠীর দিন দেবীর তৃতীয় বোধন হয়ে থাকে। ষষ্ঠীর দিন তোপধ্বনি দ্বারা দেবীর বোধন সম্পন্ন করা হয়। পূজার কিছু নিয়ম ও ঐতিহ্য আছে। যার মধ্যে রাজার একক অঞ্জলি (অন্য কেউ অঞ্জলি দিতে পারে না), ডালাদৌড়, খাঁড়াদৌড়, সন্ধিপুজোর তোপধ্বনী, সামন্তদের অস্ত্রসজ্জিত হয়ে দেবীর নবপত্রিকার বিসর্জন, এসব রয়েছে। এরকম আরও অনেক অজানা ঐতিহ্যের সাক্ষী হতে উপস্থিত থাকেন অগণিত মানুষ। বর্তমানে রাজা শ্রী প্রদীপ সিংহ দেও তাঁর পূর্বসুরিদের ঐতিহ্যের নিয়ম মেনে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে দুর্গাপুজো করে আসছেন। যোগাযোগ- সৌরভ সিংহ দেও- ৭০০১৪ ২০৩৫১